সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সিলেট নগরীতে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ডের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি সম্প্রতি সিসিক কর্তৃক পুকুর ভরাটের দায় নিজের উপর নিয়ে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এবং আন্দোলনকারীদের অব্যাহত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
মানববন্ধনে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরীতে যেভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন, ঠিক সেভাবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পাহাড়-টিলা কাটার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করুন। এক-দুইদিন নয়, লাগাতার আন্দোলন করুন। আমি আপনাদের সঙ্গে থাকবো।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’র উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সিসিক মেয়র আরিফ এসব কথা বলেন।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফুল কবিরের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া মানববন্ধনের সঞ্চালনা করেন আবুবকর আল আমিন।
এসময় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামির মাহমুদ, সম্প্রতি গড়ে ওঠা নাগরিক প্লাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এর সংগঠক রাজিব রাসেল প্রমুখ।
সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেটের সহ-সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি মামুন হাসান, বাপা সিলেটের সদস্য সুপ্রজিত তালুকদার, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক নিরঞ্জন সরকার, ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সংগঠক আনিস মাহমুদ, রুবেল আহমদ কুয়াশা, উসা সিলেটের নির্বাহী পরিচালক নিগাত সাদিয়া, সারি বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক আব্দুল হাই আল হাদি, পরিবেশকর্মী শাহ সিন্দার শাকিল, ভূমি সন্তান বাংলাদেশের সংগঠক শাকিল আহমদ সুহাগ, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেট’র সভাপতি তামান্না ইসলামসহ সদস্যরা।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট সিটি করপোরেশন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে অপরিকল্পিতভাবে পরিবেশ ধ্বংসের যে ধারাবাহিক কার্যক্রম শুরু করেছে, এতে সিলেটের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। সবুজ শ্যামল সিলেট থেকে হারিয়ে যাবে সবুজ। উন্নয়নের নামে কনক্রিটের নগর পরিণত হবে। তাই অবিলম্বে বৃক্ষকর্তনসহ পরিবেশবিধ্বংসী সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
সাম্প্রতিক নগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে একটি পুকুর ভরাট করার প্রতিবাদ করে বক্তারা বলেন, কিছুদিন আগে সিসিক থেকে উন্নয়নের নামে পুকুর ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো পুকুর ভরাট করে কিসের উন্নয়ন?কর্মসূচি চলাকালে এ মানববন্ধনে উপস্থিত হন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজেই। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার দায় নিজের উপর নিয়ে আগামীতে এ ধরণের কাজের ক্ষেত্রে সকলের পরামর্শ নিয়ে করার আশ্বাস দেন তিনি।
এমনকি তিনি সিলেট নগরকে সবুজায়নের জন্য নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সকলের সহায়তা চেয়ে মেয়র আরিফ বলেন, ইতোমধ্যে আমি নগরীর বেশ কয়েকটি দিঘি খননের প্রস্তাব দিয়েছি। নগরীর সংস্কার করা প্রতিটি সড়কের আইল্যান্ডে গাছের চারা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি। তাই গাছ কাটা হোক এটা আমিও চাই না। কিন্তু এখানে যে গাছটি কাটা হয়েছে এটা আসলে কোনভাবেই কাম্য ছিলো না। তাই আমি যখন জানলাম মানববন্ধনের কথা আমিও ছুটে এসেছি। এখানে এসে বৃক্ষের প্রতি ভালবাসা থেকে মানুষের উপস্তিতি দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি আগামীতে যদি বিশেষ প্রয়োজনে গাছ কাটতেই হয় তাহলে যথাযথ পরিকল্পনা করে, আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৫ নভেম্বর) নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গেণের একটি বড় কদম গাছ সিটি করপোরেশনের নির্দেশে কেটে ফেলেন শ্রমিকরা। এছাড়াও চলতি বছরের শুরুতে সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য শহীদ মিনার চত্বরের আরও কয়েকটি গাছ কেটে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’র ব্যানারে কিছু তরুণ-তরুণী মানবন্ধনের আয়োজন করে।
©এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব sylheterbarta24.com কর্তৃক সংরক্ষিত