মার্চ মাস মাস মানেই স্বাধীনতার মাস। মার্চ মাস মানেই পরাধীনতার শিকল ভাঙার মাস। মার্চ এলেই বাঙালি জাতির শরীরে অন্যরকম শিহরণ জাগে। এ মাসেই শক্তি ও সাহসের মাধ্যমে পরাধীনতা শিকল ভেঙে দিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করে বাঙালিরা।
বাঙালি জাতির সাহসই স্বাধীনতা অর্জনে কার্যকরি ভূমিকা রাখে। সেই উত্তাল আর অগ্নিঝরা মার্চ শুরু হলো। বাঙালির গৌরব ও অহংকারের মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসেই শুরু হয় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ।
২৫ মার্চ কালরাতে গোটা দেশজুড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনী। এর একদিন আগে বিপুল অস্ত্র ও গোলবারুদ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভেড়ে পাকিস্তানী জাহাজ সোয়াত। গোপনে অস্ত্র খালাস করতে চেয়েছিল হানাদাররা। কিন্তু প্রবল প্রতিরোধে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় মুক্তিকামী মানুষ।
ফিরে যেতে হয় অস্ত্রবাহী জাহাজকে। তবে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন ১৭জন। একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চে উত্তপ্ত চট্টগ্রামের রাজপথ। এরই মাঝে ৬৩০ টন অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে পৌছে পাকিস্তানী পতাকাবাহী জাহাজ সোয়াত। চলছি গোপনে অস্ত্র খালাসের তৎপরতা।
সেটা জেনে রাজপথে নামে জনতা। গড়ে তোলে প্রতিরোধ। ২৪ মার্চের সে অবরোধে অংশ নেন রইসুল হক বাহার। স্মৃতিতে আজো অমলিন, বন্দরের নিউমুরিং কলোনীর মাঠে ডাকা সেই প্রতিবাদ সমাবেশ। যাতে ঘোষনা দেয় হয় অস্ত্র খালাস প্রতিরোধের।
ক্ষোভের বারূদে তখন তপ্ত গোটা মাঠ। সে জনসমাবেশের মাইকিংসহ সংগঠিত করার দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের একজন মুসা আল নুরী।
তবে হঠাৎ নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে পাক বাহিনী। তাতে মারা যান ১৭ জন। যা আলোড়ন তুলে গোটা দেশজুড়ে। উঠে তীব্র নিন্দার ঝড়। জনতার প্রতিরোধের মুখে ১৮ এপ্রিল অস্ত্র খালাস না করেই চট্টগ্রাম ছেড়ে যায় সোয়াত। আর এটিই ছিল চট্টগ্রামে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ।