আজ শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবির রিপোর্টকে মিথ্যা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত জুন ১২, ২০২১, ১১:৩৪ অপরাহ্ণ
স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবির রিপোর্টকে মিথ্যা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। ফাইল ফটো

শেয়ার করুন/Share it

স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবির রিপোর্টকে মিথ্যা ও ভুল সম্বলিত বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

আজ শনিবার (১২ জুন) রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে থেকে টিআইবি স্বাস্থ্যখাত নিয়ে মনগড়া সমালোচনা করেছে। করোনার দুরসময়ে টিআইবি মাঠে নেমে কোনো কাজ করেনি। মাঠে কাজ করেছে দেশের স্বাস্থ্যখাতের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য ফ্রন্টলাইন যোদ্ধারা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে তারা মুখস্থ বিদ্যার মতো ঢালাওভাবে স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনা করেছে।

টিআইবির করা কিছু সমালোচনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিআইবি বলেছে দেশে কোভিড টেস্টিং সুবিধা বাড়ানো হয়নি। অথচ দেশে কোভিড টেস্টিং কেন্দ্র মাত্র একটি থেকে এখন ৫১০টি করা হয়েছে। টিআইবি বলেছে, হাসপাতালগুলোতে করোনা বেড সংখ্যা বাড়ানো হয়নি, অথচ এখন দেশে করোনা রোগীর বেড সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। কিছুদিন আগেও ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশন হাসপাতালে প্রায় এক হাজার নতুন কোভিড ডেডিকেটেড বেড বাড়ানো হয়েছে, যেখানে প্রায় সবই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাপ্রাপ্ত এবং সেখানকার অর্ধেক সংখ্যকেই আইসিইউ সুবিধা রয়েছে।

টিআইবি বলেছে, দেশে আইসিইউ বেড সংখ্যা বাড়েনি। অথচ করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৩০০ ভাগ আইসিইউ বেড সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে দেশে মাত্র ২০০টির মতো আইসিইউ বেড ছিল। আর এখন আইসিইউ বেড সংখ্যা এক হাজারটিরও বেশি হয়েছে। টিআইবি ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তিতে অস্বচ্ছতার কথা বলেছে যা মোটেও সত্য নয়। ভারতের সঙ্গে চুক্তি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিল স্বচ্ছ পানির মতো পরিষ্কার ও উন্মুক্ত। দেশের সব মানুষই জানে ভারতের সঙ্গে কি কি ছিল চুক্তিতে এবং কেন ভারত চুক্তির অবশিষ্ট টিকা দিতে পারেনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন , টিকার প্রায়োরিটি সেট করা বা বিদেশগামী যাত্রীদের সেবা দানের যে সমালোচনা করেছে তা আগাগোড়াই মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এমনকি ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম যখন গোটা দেশেই প্রশংসিত হয়েছে তখন টিআইবি সেটি নিয়েও সমালোচনা করেছে। অথচ দেশের করোনা মোকাবিলায় তাদের (টিআইবি) কোনো ভূমিকা নেই। মাঠে কাজ করছে দেশের স্বাস্থ্যখাত। দেশে মাত্র একটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা ছিল। সেটি এখন ১৩৪টি হাসপাতালে স্থাপিত হয়েছে। টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই করোনা চিকিৎসা পেয়েছে। ওষুধে কখনই দেশে কোনো ঘাটতি হয়নি, পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুদ রাখা হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্নীতি হলে সেটিতে দ্রুত গতিতে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। ভ্যাকসিন কার্যক্রমে যখন দেশ-বিদেশে আমাদের সুনাম হয়েছে, তারা সেটি নিয়েও সমালোচনা করেছে। সুতরাং স্বাস্থ্যখাতকে নিয়ে টিআইবির এই মনগড়া মিথ্যা রিপোর্টটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

আরও পড়ুন:  দেশে করোনায় মৃত বেড়ে ২৭৫১

স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবি কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাত নিয়ে তারা (টিআইবি) কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে, কিন্তু করোনা কেন বাড়ছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য তারা করেনি। কারণ, তারা করোনা নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রচারণা বা ভূমিকাই রাখেনি। দেশের হাসপাতাল গুলোর সমস্যা গত ৫০ বছরের। রাতারাতি সব সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে এটি প্রত্যাশা করাটা বিজ্ঞতার পরিচায়ক নয়। চিকিৎসাসেবায় গত এক বছরে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসা বান্ধব করা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার চিকিৎসক, নার্সসহ নতুন লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে। দেশের মাত্র একটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সেবা ছিল। এখন দেশের ১৩৪টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি হতে দেওয়া হয়নি। ওষুধের কোনো অভাব হয়নি। অথচ স্বাস্থ্যখাত প্রসঙ্গে ঢালাওভাবে অসত্য তথ্য তুলে ধরে জনমনে স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। ’

ভ্যাকসিন ক্রয় নিয়ে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে দ্রুতই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে সরকারের বলে জানান মন্ত্রী। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ করাটা এখন অনেকেরই একটি ‘ফ্যাশনে’ পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন,‘স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির কথাটি এখন একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অথচ বেসরকারি হাসপাতালের টেস্টিং জালিয়াতি, একজন ড্রাইভার বা নিম্ন পদস্ত কর্মচারীর দুর্নীতি বা বিচ্ছিন্ন কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্বচ্ছতার খবর ছাড়া কেউ স্বাস্থ্যখাতের বড় কোন দুর্নীতি দেখাতে পারেনি। এক্ষেত্রে যারাই স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়েছে।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীর জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।

আরও পড়ুন:  করোনায় মৃত্যু দুইশ' ছাড়াল

সিলেটের বার্তা ডেস্ক


শেয়ার করুন/Share it
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১